শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ১২:১১ অপরাহ্ন
চীনা বাহিনী এবার লাঠি ও ধারালো অস্ত্র হাতে ভারতের সীমানায় অবস্থান নিয়েছে। তারা ভারতীয় একটি পাহাড়ের চূড়া দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ভারতীয় সেনাদের বাধার মুখে তা সম্ভব হয়নি। এ সময় চীনা সেনাদের কাছে রাইফেলও ছিল। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া ও দ্য হিন্দু।
চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির ৫০ থেকে ৬৫জন সদস্য লাদাখের ব্যাংহং হুনানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) পেরিয়ে ভারতের দখলে থাকা একটি পাহাড়ের চূড়ায় যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় চীনা বাহিনীও ফাঁকা গুলি চালায় । এর জবাবে পাল্টা গুলি চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনীও। সময় মতো দু’পক্ষেরই উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পদ্ক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ভারতীয় সূত্র জানিয়েছে, হামলা চলাকালীন সময় চীনা সেনাদের হাতে রড, বর্শা, লাঠি ও ধারালো অস্ত্র ছিল। এ ব্যাপারে চীন কোনো মন্তব্য পাওয়া করেনি। এর আগে চীনের সেনারা পেরেকযুক্ত রড ব্যবহার করেছিল। ১৫ জুন লাদাখের গ্যালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল ভারত ও চীনের সেনারা। এতে জন ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হয়।সংঘর্ষে চীনেরও কয়েকজন সেনা মারা গেছে বলে প্রকাশ পায়।
রাশিয়ার মাঝারি পাল্লার সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রকে ভারত দেশীয় প্রযুক্তিতে সেটারই উন্নত সংস্করণ তৈরি করে তার নাম দিয়েছে ব্রাহ্মস।
শব্দের চেয়েও দ্রুতগামী গতি এই ব্রাহ্মসের। যুদ্ধবিমান, যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন থেকে হেলিকপ্টার, অ্যাটাক কপ্টার তার ত্রিসীমানায় আসা শত্রুপক্ষের যে কোনো শক্তিশালী সামরিক অস্ত্র নিমিষেই ধ্বংস করতে পারে ব্রাহ্মস।
তিনটি জায়গা থেকেই ছোড়া যায় এই ক্ষেপণাস্ত্র যেমন মাটি, আকাশ, পানি; । এর বেগ এত বেশি যে একবার টার্গেটের দিকে ধাওয়া করলে মাঝপথে তাকে থামিয়ে দেওয়া যাই না। বিশ্বের অত্যাধুনিক ও শক্তিশালী এই ক্ষেপণাস্ত্র আছে ভারত। শক্তিতে ও প্রযুক্তিতে যা টেক্কা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রকেও।
পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা যেভাবে বাড়ছে, তাতে শক্তিশালী ক্ষেপ
ণাস্ত্রের প্রস্তুতি দরকার ভারতের। এরই মধ্যে লাদাখে কুইক রিঅ্যাকশন সারফেস টু এয়ার মিসাইল মোতায়েন করেছে ভারত। বিমান প্রতিরক্ষা সিস্টেমকে আরো শক্তিশালী করতে ডিআরডিও (ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন)-র কাছ থেকে ‘নির্ভয়’ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার ব্যাপারে ছাড়পত্র দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
সুখোইনামী-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান রাশিয়া থেকে আসছে । সুখোই-এর এই বিমান থেকে ছোড়া যায় ব্রাহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র। তাছাড়া ভারতের তৈরি সুখোই-এর নতুন ভার্সন থেকেও ব্রাহ্মস নিক্ষেপ করার প্রযুক্তি রয়েছে।
গোপন সূত্রে পাওয়া গেছে, রাশিয়ার এনপিওএম সংস্থার তৈরি ব্রাহ্মস ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র মাঝারি পাল্লার। এই মাঝারি পাল্লার ব্রাহ্মস রয়েছেরাশিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীর হাতে।
কিন্তু ভারতের ডিআরডিও এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা আরো বাড়িয়ে তাকে ক্ষিপ্র ও বিধ্বংসী করে তুলেছে। ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে থাকা ব্রাহ্মস পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ও দ্রুতগতির অ্যান্টি-শিপ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। এটি ভূমি থেকে ভূমিতে, আকাশ থেকে ভূমিতে এবং যুদ্ধজাহাজ থেকেও ছোড়া যায়।
বর্তমানে ব্রাহ্মসের হাইপারসনিক ভার্সন ব্রাহ্মস-২ নিয়ে কাজ চলছে।
ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (এমটিসিআর) নামে একটি সংগঠন ১৯৮৭ সালে তৈরি করা হয়। ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে এগিয়ে থাকা দেশগুলো এই সংগঠনটি তৈরি করে। ভারত তখনকার সময় এই সংগঠনে ছিল না। পরে যুদ্ধাস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির প্রযুক্তিতে ভারত ২০১৬ সালে এমটিসিআরের সদস্য হয়। এর পরেই সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইলের আধুনিকীকরণে একসঙ্গে যোগ দেয় ভারত ও রাশিয়া।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্রাহ্মসের নতুন মডেল শুধু দুরন্ত গতিতে ছুটবেই না, একেবারে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করবে।
তার কারণ হলো
২০১৯ সালে ব্রাহ্মসের নতুন মডেলের পাল্লা বাড়িয়ে ৫০০ কিলোমিটার করেছিল ভারত। বর্তমানে রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই ক্রুজ মিসাইলের পাল্লা ৬০০ কিলোমিটারের বেশি রাখার করার কাজ করছে।
আকাশ থেকে নিক্ষেপের মডেলের ওজন আড়াই হাজার কিলোগ্রামের কাছাকাছি হলেও তিন হাজার কিলোগ্রাম ওজনের ব্রাহ্মস লম্বায় প্রায় ২৮ ফুট। ২০০ কিলোগ্রাম ওজনের ওয়ারহেড রয়েছে। এটি নিক্ষেপ করার জন্য রয়েছে সলিড রকেট বুস্টার ইঞ্জিন ও লিকুইড র্যামজেট ইঞ্জিন।
ভারতের ব্রাহ্মসের গতি এর চার গুণ, ব্রাহ্মসে একই সঙ্গে ক্রুজ মিসাইল, ভূমি থেকে নিক্ষেপ করা মিসাইল, বিমান থেকে নিক্ষেপ করা ক্রুজ মিসাইল, জাহাজ থেকে নিক্ষেপ করা মিসাইল রয়েছে। প্রতিরক্ষার তিন স্তম্ভ স্থলবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর হাতে রয়েছে ব্রাহ্মস। ব্রাহ্মসের গতি প্রতি ঘণ্টায় ৩৭০০ কিলোমিটার। সেখানে মার্কিন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র টমাহুকের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯০ কিলোমিটার।
Leave a Reply