শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০৭:২৬ পূর্বাহ্ন
সব রহস্যেরই ব্যাখ্যা হয় হয় না এটাই ঠিক। তাই পৃথিবীতেই এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে,যার কোন ব্যাখ্যা বিজ্ঞান আজ পর্যন্ত দিতে পারেনি। ফলে শুধু রহস্যে আবৃত হয়েই থেকে গিয়েছে সেইসব ঘটনা।
বর্তমানে আধুনিক যুগে বাস আমাদের। যে কোন ঘটনাকে বিশ্বাস করতে আমাদের প্রমাণের প্রয়োজন হয় । শুধু তাই নয়, পার্থিব সব কিছুরই চেষ্টা করা হয় বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দাঁড় করানোর। তা অবশ্য ভুল কাজ নয়। এমনকী বিশ্বাস আর বিজ্ঞানে কোনও সংঘাতও নেই । তবে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে গিয়েছে এই পৃথিবীতে, যার পূর্ণ বা কিছুটা ব্যাখ্যা বিজ্ঞান এখনও দিতে পারেনি। পরীক্ষানিরীক্ষা, বিশেষজ্ঞের মতামত পেরিয়ে সেই সব ঘটনা শুধু জন্ম দিয়ে গিয়েছে রহস্যের মতো। যে সে রহস্য নয়, বহু চেষ্টা করেও যে রহস্যগুলির কোনও কূল কিনাড়া খুঁজে পাওয়া যায়নি এখন পর্যুন্ত। এমন কী সব ঘটনাই যে ঘটেছে বহু আগে, তেমনও কিন্তু নয়। অনেক আছে বেশ সাম্প্রতিকও। প্রকৃতির অনেক কিছুই আসলে রহস্যে ঢাকা। নিজেকে সে আগলে রাখে নানা ধরনের রহস্য দিয়ে। কিছু রহস্যের সমাধান মানুষ করতে পারে। কিছু রহস্য অমীমাংসিতই থেকে যায় আজীবন। আজ তেমনই পাঁচটি রহস্যের কথা রইল আপনাদের জন্যে, যে রহস্যের কোনও সমাধান করা ওঠা যায়নি আজ পর্যন্ত।
কারা এই সবুজ রঙের ভাই-বোন,
সেই দ্বাদশ শতাব্দীর ঘটনা। ইংল্যান্ডের উলপিট এলাকা। সেখানে একজোড়া ভাই বোনের হঠাতই এসে উদয় হয়। অবাক হওয়ার বিষয় হল, এরা সবদিক থেকেই আলাদা। সাধারণ মানুষের মতো দেখতে ছিল বটে, তবে তাদের গায়ের রং ছিল অস্বাভাবিক সবুজ রঙের। দুই ভাই-বোনের কথাও কেউ বুঝত না। কারণ তাঁরা অজানা এক ভাষায় কথা বলত, পোশাকও ছিল অদ্ভূত। আর খাবার খেত কেবল কাঁচা শিম। কিছুদিন পরই ভাইটি মারা যায়, বেঁচে থাকে বোন। মেয়েটিকে ধীরেধীরে ইংরেজি ভাষা শেখানো হয়। খাওয়ানো হয় অন্যান্য খাবারও। ধীরে-ধীরে মেয়েটির গায়ের সবুজ রং পরিবর্তন হতে শুরু করে। বাকিদের সে জানায়, দুই ভাই-বোন সেন্ট মার্টিন্স ল্যান্ড থেকে এসেছে। তার কথায়, সেন্ট মার্টিন্স হল মাটির নিচে থাকা এক রাজ্য, যেখানে সবার গায়ের রং সবুজ। অনেকেই তার কথা বিশ্বাস করেনি, বহু বিশেষজ্ঞও এই ভাই-বোনের পুরনো জীবন সম্বন্ধে খোঁজ চালিয়েছিলেন, কিন্তু কিছুই খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনেকেই আবার তাদের ভিন গ্রহের প্রাণী বলে মনে করেছে। কিন্তু এই রহস্যের কোনও সমাধান এখনো হয়নি।
হঠাৎ শুরু হলো নাচ, তারপর মহামারী
তবে এই ঘটনা বহু পুরনো। ১৫১৮ সাল, জুলাই মাস। ফ্রান্সের স্ট্রসবার্গে মিসেস ত্রোফফেয়া নামের এক নারী হঠাৎ নাচতে শুরু করেন। সেই নারীর নাচ দেখে সেখানে উপস্থিত সকলেই নাচতে শুরু করেন। কিছুতেই তাঁদের নাচ থামছিল না তাদের। এক সপ্তাহ পর আরও বহু মানুষ সেই নাচের সঙ্গে যোগ দেয়। এক মাস পর শত-শত মানুষ সেই অবিরাম নাচে যোগ দেয়। অনেকেই অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন। বাকিরা ফের নাচতে থাকেন। শহরের তৎকালীন শাসকেরা ভাবলেন, এ ভাবে অবিরত নাচতে দিলে নিশ্চয়ই ক্লান্ত হয়ে নাচ থেমে যাবে সকলের। তাই তাঁরা শহরের টাউনহলে সমস্ত মানুষের নাচার ব্যবস্থা করে দিলেন। নাচ করতে করতে যাদের মধ্যে ক্লান্তি, হার্ট অ্যাটাক ও উচ্চ রক্তচাপে প্রাণ হারায় প্রায় ৪০০ জন মানুস্বের। মাসের পর মাস অবিরাম নাচতে থাকা কোনো ব্যক্তির পক্ষেই সম্ভব নয়।যদিও অনেকে দাবি করেন, বহু দিন ধরে অন্ধকার ও বদ্ধ ঘরে জল আর পাঁউরুটি খাইয়ে রাখার পর বাইরে ছেড়ে দেওয়া হয় কিছু ব্যক্তিকে। তাঁদের মধ্যেই এই নাচের ঝোঁক দেখা যায়। কিন্তু কেন শুরু হয়েছিল সেই নাচ, আর পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়নি।
১৯৪১ সালের ছবিতে তিনি, কিন্তু কী ভাবে?
১৯৪১ সালে কানাডার গোল্ড ব্রিজ থেকে একটি ছবি তোলা হয়। কিন্তু তিনি সকলের থেকেই আলাদা। বাকিদের পোশাকের সঙ্গে ওই ব্যক্তির পোশাকের কোনও মিলই নেই। মানে ওই ব্যক্তির পোশাক মোটেই ১৯৪১ সালের মতো নয়, বরং তাঁর পোশাক অনেক বেশি এখনকার মতো। ব্যক্তিটির পরনে ছিল একটি চেন লাগানো হুডি, টি-শার্ট। অবাক করার বিষয় এখানেই শেষ নয়, কারণ ১৯৪১ সালের ওই সময়ে মানুষটির হাতে ছিল একটি ডিএসএলআর ক্যামেরা! কী করে সম্ভব?দেখে মনে হতে পারে সাধারণ একটি ছবি। কিন্তু না, ভালো করে দেখলে চোখে পড়তে পারে অদ্ভূত ও অস্বাভাবিক কিছু বিষয়। কী তা? সেই ছবিতে আরও অনেকের সঙ্গে ছিলেন একজন ব্যক্তি, ওই ছবির পর ব্যক্তিটিকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। অমীমাংসিত রয়ে গিয়েছে রহস্যও।
একটা বিমান..কোথায় গেল?২৩৯ জন মানুষ সহ,
এই ঘটনা কিন্তু একেবারেই সাম্প্রতিক। মানে ২০১৪ সালের। ৮ মার্চ, ২০১৪। মালয়েশিয়া থেকে বেজিং যাচ্ছিল বিমানটি। ছিলেন ২২৭ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু। বিমানের ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে চালকের শেষ ভয়েস কানেকশন ঘটে টেক অফের এক ঘণ্টা পর এবং তারপরই রাডার থেকে নিখোঁজ হয় কয়েক মিনিটের কম সময়ের মধ্যে।এখনও প্রায় সকলেরই মনে থাকার কথা। মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স ফ্লাইট এমএইচ ৩৭০। মালয়েশিয়ার সামরিক রাডারটি প্রায় এক ঘণ্টার পর বিমানটি ট্র্যাক করে যখন আন্দামান সাগর পর্যন্ত রাডারের মধ্যে ছিল বিমানটি। অথচ বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার আগে পর্যন্ত কোনও সংকটের সংকেত, খারাপ আবহাওয়ার সতর্কবাণী বা প্রযুক্তিগত কোন সমস্যার কথা বলাই হয়নি। অনেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ভারত মহাসাগরেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে এই বিমানটি। সেই অনুযায়ী দীর্ঘ অনুসন্ধান চালানো হয়। কিন্তু বিমানের সামান্য কোনও ধ্বংসাবশেষও পাওয়া যায়নি। তাহলে কোথায় গেল বিমানটি? আজও তা জানা যায়নি।
কিসের আওয়াজ ছিল?’দ্য হাম’
১৯৬০ সাল নাগাদ এই ঘটনা। শব্দটির নামকরণ করা হয় দ্য হাম। জানা যায়, শতকরা মাত্র ২ ভাগ মানুষ ‘হাম’ শুনতে পেতেন। বিশেষত কানাডা, নিউ ম্যাক্সিকো, স্কটল্যান্ড, নিউ জিল্যান্ড-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অনেকেই এক অদ্ভূত শব্দ শুনতে শুরু করেন। অনেকটা যেন গাড়ির ইঞ্জিন চলার মতো শব্দ। এমন সে শব্দ, কানে তুলো গুঁজে রাখলেও শোনা যেত, কিন্তু সব মানুষ সেই আওয়াজ শুনতে পেতেন না।সাধারণত বাড়ির ভিতরে থাকার সময় এবং গভীর রাতে হামের আওয়াজ আরও জোরে শোনা যেত বলে জানিয়েছেন সেই সব মানুষরা। হামের কারণে মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা কিংবা অতিপ্রাকৃত ব্যখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল বিস্তর। এমনকী পাথরে পরিণত হওয়া হিপ্পিদের কান্না, জনগণের চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে সরকারের কূটকৌশল, মাটির নিচে থাকা ভিনগ্রহীদের যান UFO-এর ইঞ্জিনের শব্দ বলেও অভিহিত করা হয় ‘হাম’কে। কিন্তু আজ পর্যন্ত ওই শব্দের কোনও সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা বা কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply